সংস্কার প্রস্তাবনা দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে একমত বিএনপি |
বিএনপি বলছে: জুলাই সনদের সংস্কারে দুই বছরের সময়সীমা বাস্তবায়নযোগ্য
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে প্রস্তাবিত ‘জুলাই সনদ ২০২৫’-এর খসড়ার সাথে একমত হয়েছে বিএনপি। এই সনদের সংস্কারগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের প্রথম দুই বছরের মধ্যেই বাস্তবায়নের যে সুপারিশ রয়েছে, সেটিকে যুক্তিযুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপের ২১তম দিনে বিএনপির পক্ষ থেকে এই অবস্থান তুলে ধরা হয়।
🗣️ সালাহউদ্দিনের বক্তব্যে যা উঠে এসেছে:
তিনি বলেন,
“আমরা জুলাই সনদের একটি খসড়া পেয়েছি। এটা একটি ভূমিকা মাত্র। বিস্তারিত বিষয় পরবর্তীতে সংযুক্ত হবে। খসড়ার গঠনপ্রণালী, শব্দচয়ন, বাক্যগঠন নিয়ে কারো মতামত থাকলে, সেটি জমা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। আমরা আমাদের সংশোধনী আগামীকাল (বুধবার) জমা দেব।”
সংবিধান ও আইনি সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“অনেক পরিবর্তন সংবিধানের মাধ্যমে না করে আইন প্রণয়ন ও সংশোধনের মাধ্যমে করাই সহজতর হবে। কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ দরকার, তবে সেটিকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের মধ্যে আনতেই আইনি ভিত্তিই বেশি উপযুক্ত।”
🧕 নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বিএনপির অবস্থান:
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৫ শতাংশ (১৫টি আসন) নারীদের সরাসরি নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরবর্তী ধাপে তা ১০ শতাংশে (৩০ আসনে) উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
“আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে আসুক। বাস্তবতা বিবেচনায় ধাপে ধাপে আমরা তা বাস্তবায়ন করব।”
⚖️ ন্যায়পাল নিয়োগ নিয়ে মন্তব্য:
ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন,
“এখন পর্যন্ত ন্যায়পাল কার্যকর হয়নি। প্রথমে এটি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, এরপর তার আইনি কাঠামো যুগোপযোগী করে তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব সুস্পষ্ট করতে হবে। শুধু তদন্ত নয়, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন করতে হবে। না হলে এই প্রতিষ্ঠান অর্থবহ হবে না।”
🧾 ৭০০টির বেশি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য
সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে সালাহউদ্দিন জানান,
“প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে আমরা একমত হয়েছি। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে পরামর্শ ও সংশোধনী দিয়েছি। সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন— সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।”
বিএনপির এমন অবস্থান রাজনৈতিক সংলাপের প্রক্রিয়ায় একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। দুই বছরের সময়সীমার মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment