| যে কারণে মৃত্যুর আগের দিন তুষারকে খুঁজেছিলেন সালমান |
🔹 সালমান শাহর সঙ্গে তুষার খানের স্মৃতিচারণ
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অল্প সময়েই কোটি দর্শকের হৃদয় জয় করেছিলেন সালমান শাহ। তার প্রতিটি ছবিতে প্রায়শই দেখা যেত তুষার খানকে, যিনি সালমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মী ছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তুষার খান সালমান শাহর সঙ্গে তার সম্পর্ক, কাজের স্মৃতি এবং মৃত্যুর আগের দিন ঘটে যাওয়া কিছু না–ভুলতে পারা ঘটনাকে স্মরণ করেন।
🔸 বন্ধুত্ব ও কাজের দিনগুলো
তুষার খান বলেন, “সালমান আমার থেকে বয়সে ছোট হলেও আমাদের মধ্যে ছিল অসাধারণ বন্ধুত্ব। বড় ভাই বা বন্ধু—যাই বলুন না কেন, ওর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। শেষের দিকে প্রায় ২৪ দিন আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি, কখনো ৫ দিন অন্য ফিল্মের কাজও করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “রাত পর্যন্ত কাজ শেষ হলে ও ওর বাসায় চলে যেত, আমি আমার বাসায়। কখনো দেখা যেত রাত ১১টা বা সাড়ে ১১টার সময়ও। প্রতিদিনই আড্ডা হতো। সালমান অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। সত্যিই, ভালো মানুষ বেশি দিন থাকে না।”
🔸 অভিনয়ের প্রতিভা ও প্রভাব
তুষার খান বিশ্লেষণ করেন, “এত বছর হলো সালমান চলে গেছে, কিন্তু ফিল্মগুলো দেখলে মনে হয়তো এই তো সেদিনের ফিল্ম। নতুন প্রজন্মও এখন সালমানকে ভালোবাসে। ও অভিনয় দিয়ে যে জায়গা তৈরি করেছে, সেটা সত্যিই অনন্য।”
🔸 মৃত্যুর আগের দিন ঘটে যাওয়া ঘটনা
সালমানের মৃত্যু প্রসঙ্গে তুষার বলেন, “ও যখন মন খারাপ হতো, প্রায়ই আমার সঙ্গে কথা বলতো। আমাকে ফোন করতো, ‘আমার ভালো লাগছে না, আমি তোমার বাসায় আসব’। ওর ফোন পেলে আমি কোথাও যাই না। একসঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলতাম। পরদিন আবারও ফুরফুরে মেজাজে সেটে দেখতাম।”
তুষার আরও বলেন, “সালমান যেদিন মারা যায় তার আগের দিন আমি আমেরিকা থেকে দেশে ফিরি। বিকেলে ‘প্রেমপিয়াসী’ সিনেমার ডাবিং ছিল। ডাবিংয়ে যাওয়ার আগে আমি একটি পার্সেল আত্মীয়ের বাড়িতে দিতে যাই। ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় তাঁরা আমাকে আর ডাকেনি।”
মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার সময় তিনি বলেন, “রাত পৌনে ১১টায় ঘুম ভাঙে। পরদিন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের কন্যা আমাকে ফোন করে জানায়, সালমান সুইসাইড করেছে। আমি মেনে নিতে পারিনি।”
🔸 আফসোস ও হৃদয়বিদারক স্মৃতি
তুষার আফসোস করে বলেন, “হাসপাতালে পরিচালক রেজা হাসমত আমাকে দেখে বলেন, ‘কালকে আপনি কোথায় ছিলেন?’ আমি বললাম কেন। তিনি জানালেন, গতকাল ডাবিংয়ে সালমান খুব আপসেট ছিল, আমাকে অনেক খুঁজেছে। ফোনে না পেয়ে আমার বাসায় লোক পাঠিয়েছে। এই কথা শুনে মনে হয়, ও হয়তো অন্যদিনের মতো আমার সঙ্গে কিছু কথা শেয়ার করতে চেয়েছিল। হয়তো আমার সঙ্গে কথা হলে মনটা ফ্রেশ হয়ে যেত।”
তিনি শেষ করেন, “ওদিন আমি যদি আত্মীয়ের বাসায় ঘুমাই না, আজও সালমান আমাদের মাঝে থাকতে পারত। এত দর্শকের মন ভাঙত না। এই কষ্ট সারাজীবন থাকবে।”
No comments:
Post a Comment