| 'ফুটবল জাদুকর' ম্যারাডোনার জন্মদিন আজ |
ফুটবল ইতিহাসের এক অমর নাম ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা। ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আইরেসের দরিদ্র এলাকা ভিয়া ফায়োরিতায় জন্ম নেওয়া এই বিস্ময় বালক ছোটবেলা থেকেই ফুটবলকে ঘিরে বাঁচতেন। আজ এই কিংবদন্তির ৬৫তম জন্মদিন।
মাত্র ১৬ বছর বয়সেই জাতীয় দলে সুযোগ পান ম্যারাডোনা। ১৯৭৯ সালে জাপানে যুব বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনাকে এনে দেন প্রথম শিরোপা, আর সেই টুর্নামেন্টেই সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। তখনই বিশ্ব বুঝে যায়— ফুটবলের নতুন জাদুকর জন্ম নিচ্ছেন।
১৯৮২ সালে প্রথম বিশ্বকাপে খেলা শুরু করলেও প্রকৃত কিংবদন্তিতে রূপ নেন ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপে। সেই আসরে “হ্যান্ড অব গড” ও “গোল অব দ্য সেঞ্চুরি” দিয়ে বিশ্বকে মুগ্ধ করে আর্জেন্টিনাকে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানান। এরপর ইতালির নাপোলিতে যোগ দিয়ে ক্লাবটির ভাগ্যই পাল্টে দেন। সাত বছরে নাপোলিকে এনে দেন লিগ ও ইউরোপিয়ান কাপের গৌরব— শহরের মানুষের হৃদয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন দেবতার আসনে।
তবে সাফল্যের সঙ্গে ছিল বিতর্কও। ১৯৯০ বিশ্বকাপে আবারো আর্জেন্টিনাকে তুলেছিলেন ফাইনালে, কিন্তু পরবর্তীতে ডোপ কেলেঙ্কারিতে ১৫ মাস নিষিদ্ধ হন। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে ফের পজিটিভ ডোপ টেস্টে তার ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায় রচিত হয়। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে মোট ৩৪৬ গোল করে যান এই মহাতারকা।
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান ম্যারাডোনা। জীবনের শেষ সময়ে কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন, ২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের কোচ ছিলেন তিনি। যদিও সেই আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নিতে হয়, তবু তিনি ছিলেন তার দেশের অনুপ্রেরণার প্রতীক।
তার মৃত্যুর দুই বছর পর, ২০২২ সালে কাতারে লিওনেল মেসির হাত ধরে আবারও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা— যেন ম্যারাডোনার অসমাপ্ত স্বপ্নের পূর্ণতা। বেঁচে থাকলে হয়তো সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হতেন তিনিই। আজও ফুটবল ভক্তদের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন ‘এল দিয়েগো’।
No comments:
Post a Comment