ক্ষমা মুমিনের অনন্য বৈশিষ্ট |
ক্ষমা: একটি মুমিনের মহৎ গুণ
ক্ষমা একটি মহান গুণ যা একজন প্রকৃত মুমিনের পরিচয় বহন করে। ইসলাম ধর্মে ক্ষমাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
"আর যারা রাগ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।"
(সুরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৪)
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন ক্ষমাশীলতার এক অনন্য উদাহরণ। ব্যক্তিগত আক্রমণের প্রতিশোধ তিনি নিতেন না। বরং ক্ষমা ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করতেন।
একবার এক বেদুইন নবীজির চাদর টেনে ধরলে তাঁর কাঁধে দাগ পড়ে যায়। সে তখন কর্কশ কণ্ঠে কিছু চায়। নবীজি (সা.) তখন শুধু মুচকি হেসে তার চাহিদা পূরণের নির্দেশ দেন (বুখারি, হাদিস: ৩১৪৯)।
ক্ষমার আদেশ কোরআনে স্পষ্টভাবে এসেছে
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাঁর রাসুলকে নির্দেশ দেন—
"ক্ষমাশীলতা অবলম্বন করুন, মানুষকে ভালো কাজের নির্দেশ দিন এবং মূর্খদের উপেক্ষা করুন।"
(সুরা: আরাফ, আয়াত: ১৯৯)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদিসে এসেছে, হযরত উমর (রা.) একবার রেগে যাওয়ার সময় একজন সাহাবী তাঁকে এই আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি তাৎক্ষণিক রাগ সংবরণ করেন।
এ থেকেই বোঝা যায়, সাহাবাগণ কোরআন-হাদিসের আলোকে নিজেদের চরিত্র গঠন করতেন। ক্ষমাশীলতা তাঁদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিল।
ক্ষমা: একটি কার্যকর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি
প্রিয় নবী (সা.)-এর এই ক্ষমাশীল চরিত্রই ইসলামের প্রসারে বড় ভূমিকা রেখেছে। কোরআনে বলা হয়েছে—
"আল্লাহর দয়ায় আপনি তাদের প্রতি কোমল হয়েছেন। যদি আপনি রূঢ় ও কঠোর হৃদয়ের হতেন, তবে তারা আপনার চারপাশ থেকে সরে যেত। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করুন।"
(সুরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯)
আমাদের করণীয়
আজকের সমাজে রেষারেষি, রাগ, প্রতিহিংসা বেড়েই চলেছে। অথচ ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়—ঘৃণা নয়, ক্ষমা এবং ভালোবাসা দিয়েই জয় করতে হবে। তাই আসুন, নিজের ভেতর ক্ষমাশীলতা গড়ে তুলি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দিন। আমিন।
No comments:
Post a Comment