মায়ের দোয়া-বদদোয়া: সন্তানের ভাগ্য নির্ধারণে বড় হাতিয়ার |
মায়ের দোয়া—জান্নাতের পথ, আর বদদোয়া—জীবনের শাস্তি!
রিপোর্টার: পিপলস বাংলা ডেস্ক | তারিখ: ২৯ জুলাই ২০২৫
মা—এই ছোট্ট শব্দেই লুকিয়ে আছে ভালোবাসা, ত্যাগ, কষ্ট আর সীমাহীন মমতা।
ইসলামে মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়, বরং তা আল্লাহর নির্দেশ ও ইবাদতের অংশ হিসেবে বিবেচিত।
কুরআন ও হাদিসে মায়ের মর্যাদা
আল্লাহ তাআলা বলেন—
“আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে।”
(সূরা আহকাফ: ১৫)
মায়ের দোয়ার প্রভাব এতটাই গভীর যে, রাসূল (সা.) বলেন—
“তিন ব্যক্তির দোয়া ফেরত যায় না—প্রকৃত রোজাদারের, ন্যায়পরায়ণ শাসকের ও মজলুম ব্যক্তির।”
(তিরমিজি: ৩৫৯৮)
ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেছেন—
“মায়ের মুখ থেকে নিঃসৃত দোয়া এমন সুফল বয়ে আনতে পারে, যা কোনো অলির মোনাজাতে হয় না।”
বদদোয়ার ভয়াবহতা
ইসলামে কাউকে কষ্ট না দেওয়ার শিক্ষা বারবার এসেছে।
মায়ের বদদোয়া হতে পারে সন্তানের জীবনের জন্য ভয়ংকর ক্ষতির কারণ।
রাসূলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করে বলেন—
“নিজেদের, সন্তানদের বা সম্পদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করো না, এমন সময় যেন না হয় যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে দোয়া কবুল হয়ে যায়।”
(সহিহ মুসলিম: ৩০১৪)
সন্তানকে রাগের বশে মা যদি বলে ফেলেন, “তুই সুখ পাবি না”—
তা যদি কবুল হয়ে যায়, তবে সন্তান বছরের পর বছর দুর্ভোগে কাটাতে পারে।
সন্তানের করণীয়
-
মায়ের সামনে উঁচু স্বরে কথা নয়, ধমক নয়—বরং বিনয়ের সাথে কথা বলা ইসলামের শিক্ষা।
“তাদের সামনে ‘উফ্’ শব্দটিও করো না...” (সূরা ইসরা: ২৩)
-
রাসূল (সা.) বলেন—
“তোমার মায়ের সেবা করো, কারণ জান্নাত তার পায়ের নিচে।”
(নাসাঈ: ৩১০৪) -
সন্তানের উচিত মায়ের মন জয় করা, তার প্রয়োজন বুঝে পাশে দাঁড়ানো, এবং দোয়া চাওয়া।
মায়ের দায়িত্বও আছে
ইসলাম মায়ের দিক থেকেও সংযম ও ধৈর্য শিক্ষা দেয়।
রাগের সময় নীরব থাকা, সন্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, এবং বদদোয়া না করে দোয়া করা একজন মায়ের গুণ।
উপসংহার
মা হলেন সন্তানের জান্নাতের চাবিকাঠি।
মায়ের মুখে সন্তুষ্টির হাসি থাকলে, আল্লাহর রহমত আমাদের ঘিরে রাখবে ছায়ার মতো।
আর তাই আমাদের দায়িত্ব—মায়ের মন যেন কখনো না ভাঙে।
No comments:
Post a Comment