| শিবিরকে হলে মেরে ফেলা হতো ‘হিপোক্রেসির’ মাধ্যমে: সাদিক কায়েম |
“শিবিরকে হলে মেরে ফেলা হতো—হিপোক্রেসির মাধ্যমে” : ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম
ঢাকা | পিপলস বাংলা নিউজ
জুলাই বিপ্লবে শহীদ ইকরামুল হক সাজিদের আত্মত্যাগ স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন,
“শিবিরকে হলে মেরে ফেলা হতো—হিপোক্রেসির মাধ্যমে।”
সোমবার (১৩ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামি ছাত্র শিবিরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত আন্তঃবিভাগ পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাদিক কায়েম বলেন,
“স্লোগান আর মুক্তির কথা বলতে গিয়ে আমরা ১৬ বছর ধরে এক যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছি। এই সময়ে ফ্যাসিস্টদের উত্থান দেখেছি, দেখেছি শিক্ষক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের অনেকে মুখ না খুলে জুলুমের বিরুদ্ধে মৌন সম্মতি দিয়েছে। তারা মুক্তির কথা বলেছে, কিন্তু হিপোক্রেসির মাধ্যমে ফ্যাসিস্টদেরই টিকিয়ে রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইসলামি ছাত্র শিবির সবসময় সৃজনশীলতা, কল্যাণ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কাজ করে আসছে। সুন্দর সমাজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও গাজীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন,
“যারা হাসপাতালে আছেন, তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের হাসিবের প্রতিও রইল শ্রদ্ধা।”
তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনায়ও অনেক বুদ্ধিজীবী নীরব থেকেছেন।
“তারা সমাজের প্রকৃত মুক্তির কথা কখনো বলেননি,” বলেন ডাকসু ভিপি।
সাদিক কায়েম আরও বলেন,
“আজ আমরা মুক্তভাবে কথা বলতে পারি। একসময় হলে শিবিরের নাম বললেই মারধর, নির্যাতন, এমনকি হত্যা করা হতো—হিপোক্রেসির মাধ্যমে। এখন অন্তত নিজেদের পরিচয় দিতে পারি, এটা বড় অর্জন।”
তিনি জানান, সাম্প্রতিক গুম ও নির্যাতনের রিপোর্টে দেখা গেছে, ইসলামি ছাত্র শিবিরের সদস্যরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছেন।
“আমরাই শিক্ষার্থীদের প্রকৃত রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছি, ৫ আগস্টের আন্দোলনে সেটি প্রমাণিত হয়েছে,” যোগ করেন তিনি।
ছাত্র রাজনীতির সংস্কার প্রসঙ্গে সাদিক বলেন,
“আগস্টের পরে আমরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় হবে জ্ঞানের ভাণ্ডার, রাজনীতির আখড়া নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে গবেষণার বরাদ্দ খুবই কম। শিক্ষকরা সাদা-নীল দলে বিভক্ত—এই বিভাজন বন্ধ করতে হবে। শিক্ষকদের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও সম্মান দিতে হবে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,
“শিক্ষকদের ওপর কোনো ফ্যাসিবাদী আচরণ করা যাবে না। বাংলাদেশের পুনর্গঠনে শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,
“আগামী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদে ইসলামি ছাত্র শিবিরের প্যানেল সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য হবে।”
অনুষ্ঠানে শহীদ সাজিদের বোন ফারজানা বলেন,
“জকসু নির্বাচনে যে-ই আসুক না কেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে কাজ করবে, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবে—এটাই প্রত্যাশা। আমি চাই, সাজিদের নামটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যুগ যুগ ধরে অমর হয়ে থাকুক।”
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসাইন বলেন,
“বিতর্ক চিন্তাশক্তিকে শাণিত করে, আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, যুক্তিনির্ভর চিন্তা শেখায়। রাজনৈতিক সচেতনতা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য জরুরি। শিক্ষককেও জ্ঞাননির্ভর কাজে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।”
No comments:
Post a Comment