| ক্ষমা চাইতে রাজি নন ফ্যাসিস্ট হাসিনা, থাকতে চায় ভারতেই |
🔹 জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থান: আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার অবস্থান
জাতিসংঘের স্বাধীন প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১৪০০ জন নিহত এবং হাজারো মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটররা ফ্যাসিস্ট হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ চেয়েছেন।
তবে এসব হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ক্ষমা চাইতে রাজি নন ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট হাসিনা।
🔸 আন্তর্জাতিক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান
ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থানরত ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাক্ষাৎকার আজ বুধবার রয়টার্স, এএফপি এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এ প্রকাশিত হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ‘প্রত্যাখ্যান’ করেছেন এবং চলমান বিচারকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত অডিওতে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি দাবি করেছেন এটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ—আমি বাহিনীগুলোকে আন্দোলনে গুলি চালাতে বলেছি—এটা মিথ্যা।” তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, চেইন অব কমান্ডের ভেতরে কিছু ভুল হয়েছিল।
🔸 ট্রাইব্যুনালের রায় ও তার বক্তব্য
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৩ নভেম্বর ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করবে। হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তাকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি বা কোনো আইনজীবী নিয়োগ করেননি।
রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “ক্যাঙ্গারু কোর্টে মামলা চলছে, অপরাধী বানিয়ে রায় আগেই নির্ধারিত হয়েছে।” মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলে তিনি “অবাক বা ভীত হবেন না” বলেও জানিয়েছেন।
🔸 নিহতদের জন্য শোক, ক্ষমা না
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে হাসিনা বলেন, “আমি নিহত প্রতিটি শিশু, ভাইবোন, আত্মীয় ও বন্ধুর জন্য শোক জানাই,” তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানান। তার দাবি, সরকার উৎখাতের জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অস্থিরতা তৈরি করেছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন না করে লাখো মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। ফ্যাসিনার দাবি, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ‘অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার’ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অধিকার সীমিত করছে, যা “জনগণের মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।”
🔸 নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক মন্তব্য
ফ্যাসিনার মতে, “আওয়ামী লীগসহ প্রধান সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হবে না। কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চাইলে, লাখ লাখ মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না।” উল্লেখ্য, বিগত আমলে তার সরকার বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচন করেছিল, যেখানে লাখ লাখ ভোটার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা অন্যায় ও আত্মঘাতী। ২০২৪ সালে পতনের মাত্র কয়েকদিন আগে তার সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল।
ফ্যাসিনার মতে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত চলাকালে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ, যা ভবিষ্যতের জন্য বিভেদের বীজ বপন করবে। তিনি দাবি করেছেন, মামলাগুলো “কোনো প্রমাণসাপেক্ষে করা হয়নি” এবং ট্রাইব্যুনালটি “রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের দ্বারা গঠিত।”
🔸 ভবিষ্যতের অগ্রাধিকার
ফ্যাসিনা জানান, তিনি দিল্লিতে নিরিবিলি ও স্বাধীনভাবে বসবাস করছেন। মাঝে মাঝে শহরের লোধি গার্ডেনে হাঁটেন, তবে অতীতের কারণে সতর্ক। তার অগ্রাধিকার এখন বাংলাদেশের কল্যাণ ও স্থিতিশীলতা।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কার্যক্রম পুনর্বহাল করা হবে এবং আওয়ামী লীগের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে।
No comments:
Post a Comment