মোদির ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই কাল হয় কোরবান আলীর - People’s Bangla

People’s Bangla

Voice of the People | জনতার কণ্ঠস্বর

সর্বশেষ

Home Top Ad

Post Top Ad

Sunday, September 28, 2025

মোদির ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই কাল হয় কোরবান আলীর

মোদির ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই কাল হয় কোরবান আলীর

হেফাজতের মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী: ২০২১ সালের গ্রেপ্তার ও কারাবাসের কষ্টকর অভিজ্ঞতা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২০২১ সালে ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন হাফেজ মাওলানা মুফতি কোরবান আলী কাসেমী। ওই সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা হরতালের সমর্থনে তিনি রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অফিসের গলি থেকে একটি মিছিলে অংশ নেন এবং বায়তুল মোকাররমে অবস্থান শেষে মোনাজাত করেন। এতে আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর রোষানলে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার হয়ে তিনটি মামলায় দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় কারাগারে কাটাতে হয়।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের সহসভাপতি মুফতি কোরবান আলী জানান, ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল রোজার সময় দুপুরে তিনি রাজধানীর সবুজবাগের কদমতলার বাসায় কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। এ সময় ডিবি পরিচয়ে ৮-১০ জন তার বাড়িতে হানা দেয়।

ডিবির কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অফিসে নিয়ে যেতে চাইলে বিকাল ৪টার দিকে তাকে মাইক্রোতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যায় ডিবি অফিসে খোঁজ নেওয়া হলে বলা হয়, কোরবান আলী নামে কাউকে আনা হয়নি। এতে পরিবারের সদস্যরা গুমের শঙ্কায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাত ৯টার দিকে অনলাইন পত্রিকায় গ্রেপ্তার খবর প্রচার হলে পরিবারের চিন্তামুক্তি আসে।

কোরবান আলী বলেন, “গ্রেপ্তারের পর ডিবিতে ইফতারের আগেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তারা দলের অন্যান্য নেতাদের খোঁজ নেন এবং আমার কাছে সেই ঠিকানা জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ হন। আলেমদের নাম নিয়েও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। পরে চোর-ডাকাতদের সেলে রাখা হয়, যেখানে বদ্ধ পরিবেশ ও মশার সমস্যা ছিল। আদালতে উপস্থাপনের পর সাত দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়।”

তিনি জানান, পল্টন থানায় রিমান্ড চলাকালে পুলিশ অযাচিত প্রশ্ন ও ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্যের মাধ্যমে মানসিক কষ্ট প্রদান করে। রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সাধারণ কয়েদিদের মোবাইলের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ থাকলেও আলেমদের ক্ষেত্রে তা নিষিদ্ধ ছিল। ফলে কেন্দ্রীয় কারাগারে আসার পর প্রায় দুই মাস পরিবার কোনো খোঁজ পায়নি।

মুফতি কোরবান আলী বলেন, কাশিমপুর কারাগারে থাকা অবস্থায় শ্বশুরের ইন্তেকালের খবর পেয়ে কান্নাও করতে পারেননি, কারণ কারারক্ষীরা জিজ্ঞেস করলে আরও নির্যাতন হতো।

তিনি আরও জানান, বাসাবো কদমতলার ‘হীরাঝিল জামে মসজিদে’ ১৯৯৭ সাল থেকে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করলেও গ্রেপ্তারের ১৫ দিন পর চাকরি চলে যায় এবং মাদরাসার বেতনও বন্ধ হয়। ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পেলেও ইমাম-খতিবের দায়িত্ব ফিরতে পারেনি।

মুফতি কোরবান আলী বলেন, “বর্তমান সরকারের নানা আশ্বাস সত্ত্বেও আমার বিরুদ্ধে করা তিনটি মিথ্যা মামলা এখনও তুলে নেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্টমুক্ত পরিবেশে এ ধরনের আচরণ খুবই দুঃখজনক।”

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

© 2025 Peoples Bangla | All Rights Reserved.
×