| ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাসহ তিন বিষয়ে গুরুত্ব দেবে জামায়াত |
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাব্যবস্থা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও সামাজিক ন্যায়বিচারে গুরুত্ব দেবে: আমির ডা. শফিকুর রহমান
রোববার জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, দল ক্ষমতায় গেলে তিনটি মূল বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবে—যোগ্য নাগরিক তৈরির শিক্ষাব্যবস্থা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
এই মন্তব্য তিনি করেছেন ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ইলেকশন অবজারভেশন মিশনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে। দুপুরে রাজধানীর জামায়াত আমিরের বসুন্ধরা কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইইউ প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছেন, যদি জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রের দায়িত্ব পায়, তাহলে প্রধান এজেন্ডা কী হবে। এ প্রসঙ্গে আমির তিনটি বিষয় তুলে ধরেন।
প্রথমত, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নৈতিকতা, উৎপাদনমুখী, টেকনিক্যাল ও মানবিক দিক থেকে এমনভাবে গড়ে তোলা হবে যাতে নাগরিকরা যোগ্য হয়। দ্বিতীয়ত, সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে থাকা দুর্নীতি দূর করে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। তৃতীয়ত, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
জামায়াত আমির বলেন, “বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে মানুষ বঞ্চিত ও নির্যাতিত হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ করা হয়েছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ইইউ প্রতিনিধি দল যখন দেশে এসেছিল, তখন আমরা কারাগারে ছিলাম।”
বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন টিম লিডার ইলেক্টোরাল ও পলিটিক্যাল এক্সপার্ট মেটে বাক্কেন, লিগ্যাল এক্সপার্ট ম্যানুয়েল ওয়ালি এবং ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন বেইবা জারিনা। জামায়াতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের মেডিকেল থানা আমির ডা. এসএম খালিদুজ্জামান এবং আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।
গোলাম পরওয়ার জানান, ইইউ প্রতিনিধি দল জামায়াত আমিরের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে মতবিনিময় করেছেন। তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করাই সফরের মূল উদ্দেশ্য। নির্বাচনকালীন পর্যবেক্ষণের জন্য তারা ৬৪টি জেলায় একজন করে প্রতিনিধি পাঠাবেন।
জামায়াত আমির প্রতিনিধিদলকে বলেন, “শুধু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নয়, বরং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইইউ’র টেকনিক্যাল সাপোর্টের প্রয়োজন।”
প্রবাসীদের ভোট ও ভোটাধিকার বিষয়ে জানতে চেয়ে, তিনি জানান, “জামায়াতই প্রথম এক কোটির বেশি প্রবাসী ভোটারের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি তুলেছে। নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
জামায়াত আমির আরও বলেন, বিগত দেড় যুগে গণতন্ত্র দমন ও বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত, তবে শর্ত হলো জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করে ফ্রি, ফেয়ার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা।
বৈঠক শেষে জামায়াত আমির ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ইইউ জানিয়েছে, তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আবারও বাংলাদেশ সফরে আসবেন এবং ঘনিষ্ঠভাবে মতবিনিময় করবেন।
No comments:
Post a Comment