যুদ্ধের এক দশক পর জন্ম হয়েও বীর মুক্তিযোদ্ধা নিরেন চন্দ্র সিংহ - People’s Bangla

People’s Bangla

Voice of the People | জনতার কণ্ঠস্বর

সর্বশেষ

Home Top Ad

Post Top Ad

Sunday, September 28, 2025

যুদ্ধের এক দশক পর জন্ম হয়েও বীর মুক্তিযোদ্ধা নিরেন চন্দ্র সিংহ

যুদ্ধের এক দশক পর জন্ম হয়েও বীর মুক্তিযোদ্ধা নিরেন চন্দ্র সিংহ

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ: জন্মপত্র ও বয়স মিলছে না

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তঘেষা গ্রাম উত্তর পাড়িয়া। ১৯৮০ সালের ২২ জুন ভুবেন চন্দ্র ও সরলা দেবীর ঘরে জন্ম নেন নিরেন চন্দ্র সিংহ। রক্তক্ষয়ী ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাত্র ১০ বছর পর জন্ম হলেও, তিনি এখন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম জোগান। নিজের বড় বোনের বয়সের সঙ্গে তার বয়সের মিলও নেই; বড় বোনের চেয়ে ৯ বছর বয়সে বড় বলে আইডিতে দেখানো হয়।

নিরেন চন্দ্র সিংহের নামে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র। তিনি মাসিক ভাতা সহ সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন। তবে যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ঘটনা মনে নেই তার।

নিরেনের মতোই একই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের মোখলেসুর রহমান চৌধুরী ও আব্দুস সালাম চৌধুরীও একইভাবে অসুদপায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় অর্থের বিনিময়ে তারা গেজেটভুক্ত হয়েছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর তারা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং খোঁজ মেলছে না।

৩০ লাখ মানুষের আত্মদানে স্বাধীন বাংলাদেশ। তবে অনেকে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন। প্রকৃত যোদ্ধাদের দাবি, এমন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

যুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিরেন চন্দ্র সিংহ বলেন, “অনেক আগের ঘটনা এখন আর মনে নেই। আর জন্ম তারিখটা ভুল হয়েছে।”

বড়বোন শ্রীমতি রানী বলেন, “সে আমার ছোট ভাই। আইডিতে ভুল হওয়ায় আমার চেয়ে ৯ বছর বয়সে বড় হয়ে গেছে।”

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম বলেন, “হাসিনা সরকার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কারখানা নিয়ে বসেছিল। যুদ্ধের সময় জন্ম না হওয়া, শিশু বয়সে থেকেও অনেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, যাদের অংশগ্রহণ আমরা দেখিনি। নিরেন, মোখলেস চৌধুরী ও আব্দুস সালাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। এমন আরও অনেকে আছে। বর্তমান সরকারকে এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিল করা জরুরি।”

ঠাকুরগাঁও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর করিম বলেন, “অতীত সরকারের আমলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা জন্ম নিয়েছে। সদর থানায় যুদ্ধের পরে ৩০০ থেকে ৩৫০ যোদ্ধা ছিল। এখন ৮৫০ জন গেজেটভুক্ত হয়েছে। বাকি উপজেলা বাদে। এদের সব সুবিধা বঞ্চিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, “অমুক্তিযোদ্ধা বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হবে।”

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

© 2025 Peoples Bangla | All Rights Reserved.
×