গুম-খুনে জড়িত জিয়াউলসহ ২৩ কমান্ডার চিহ্নিত |
বাংলাদেশে গত পনেরো বছরে বিপুলসংখ্যক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। এসব গুমের পেছনে রাষ্ট্রীয় পাঁচটি বাহিনীর কিছু চিহ্নিত কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। তদন্তে উঠে এসেছে, এককভাবে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ প্রায় ৬০ শতাংশ গুমে জড়িত ছিলেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
🔹 আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পদক্ষেপ
গত ৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুমে জড়িত ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যার মধ্যে পাঁচজনই সাবেক ডিজিএফআই প্রধান বা পরিচালক।
তারা হলেন—
- লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন
- মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম
- লে. জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী
- মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক
- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) তৌহিদুল ইসলাম
🔹 গুম তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন
অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের ২৭ আগস্ট বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি ‘গুম তদন্ত কমিশন’ গঠন করে। কমিশনকে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনাগুলো অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তদন্ত শেষে কমিশন দুটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট “Unfolding the Truth: A Structural Diagnosis of Enforced Disappearance in Bangladesh” শিরোনামে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে।
🔹 তিন ধাপে গুমের বাস্তবায়ন
প্রতিবেদন অনুযায়ী গুমের ঘটনাগুলো মূলত তিন ধাপে ঘটত:
- কৌশলগত নেতৃত্ব – সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক এবং পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামী সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা।
- বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা – বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার চিহ্নিত সদস্যরা।
- মাঠপর্যায়ের কার্যকরী দল – ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে গুম কার্যকর করত।
🔹 ভয়ংকর পরিসংখ্যান
👉 কমিশনের নথি অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মোট ১,৮৫০টি গুমের অভিযোগ এসেছে।
👉 এর মধ্যে এখনো ৩৪৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
👉 এসব ঘটনায় ২৩ জন কমান্ডারকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলেন কুখ্যাত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান।
🔹 ভুক্তভোগীদের আতঙ্ক
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, যারা কমিশনে অভিযোগ করেছেন, তাদের অনেকেই এখনো ভয় ও হুমকির মধ্যে রয়েছেন। কমিশনের হাতে এসব থ্রেটের প্রমাণও রয়েছে।
No comments:
Post a Comment