ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি |
এক বছরে ঘুরে দাঁড়াল অর্থনীতি: রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও ঋণ শোধে রেকর্ড
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি ঋণ শোধের সাফল্য এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি—সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে ফিরেছে স্থিতিশীলতা।
রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে উল্লম্ফন
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৪.৯% বেশি। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি।
একই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার—বছওয়ারি প্রবৃদ্ধি ২৯.৪৭%। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ, ৩ হাজার ৩২ কোটি ডলার।
ঋণ শোধে নজির
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার ৪০৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার বিদেশি ঋণ শোধ করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ জানিয়েছে, নতুন ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে পুরোনো ঋণ শোধে জোর দিচ্ছে সরকার।
বৈদেশিক লেনদেন ও রিজার্ভ
বছর শেষে বৈদেশিক লেনদেনে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি উদ্বৃত্ত হয়েছে। জুলাই শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার, ডলার সংকট পুরোপুরি কেটে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মূল্যস্ফীতি ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি
জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৮.৫৫% হলেও সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে তা ৬%-এ নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ধীরে বাড়ছে—চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে নিট প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ৭৬% বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মূল্যায়ন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় কোনো সংস্কার ছাড়াই আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে রাজস্ব আদায় ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
মাথাপিছু আয় ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি
মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২০ ডলারে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সামান্য কমে হয়েছে ৩.৯৭%।
No comments:
Post a Comment