🟥 শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুলি চালানোর নির্দেশের অভিযোগ, ফাঁস হলো গোপন ফোনালাপ: আল জাজিরার প্রতিবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক | পিপলস বাংলা
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের প্রকাশ্য নির্দেশ’ দিয়েছিলেন—এমন অভিযোগ তুলেছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংস্থাটি বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) তাদের এক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া ফোনালাপ এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরে।
🔴 “যেখানেই পাওয়া যাবে, গুলি করো”—প্রকাশ্য নির্দেশ
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের যেখানেই পাওয়া যাবে, গুলি চালাতে নির্দেশ দেন।
আল জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট (আই-ইউনিট) দাবি করেছে, তাদের হাতে থাকা ফোনালাপগুলো ফরেনসিকভাবে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, সেগুলো কৃত্রিম নয়, বরং বাস্তব এবং সংশ্লিষ্টদের কণ্ঠস্বর মিলিয়ে প্রমাণিত।
এই ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়:
“ইতোমধ্যে আমি প্রকাশ্যে নির্দেশ দিয়েছি। এখন তারা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানেই পাবে গুলি চালাবে।”
🛑 হেলিকপ্টার থেকেও গুলি?
এক ফোনালাপে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে শেখ হাসিনা বলেন,
“যেখানেই জমায়েত দেখা যাবে, ওপর থেকেই এখন শুরু হয়ে গেছে।”
যদিও সরকার আকাশ থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শাবির শরীফ জানিয়েছেন,
“আমাদের হাসপাতালের প্রবেশপথ লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়। আহত শিক্ষার্থীদের শরীরে গুলির অস্বাভাবিক ক্ষত পাওয়া গেছে।”
🔎 আন্দোলন, মৃত্যু ও ‘কভার-আপ’
২০২৪ সালের জুনে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
১৬ জুলাই রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনার পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়।
আল জাজিরা বলছে,
এই হত্যাকাণ্ড নিয়েও সরকার ফোনালাপের মাধ্যমে পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রিপোর্ট বদলানোর চেষ্টা করে।
ডা. রাজিবুল ইসলাম, যিনি ময়নাতদন্ত করেন, জানান:
“পুলিশ পাঁচবার রিপোর্ট পরিবর্তন করাতে চেয়েছিল যাতে বলা হয়, পাথরের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে।”
👨👩👧 পরিবারগুলোকে ‘গণভবনে ডেকে নেওয়া’
আবু সাঈদের পরিবারের দাবি, তাদের জোর করে গণভবনে ডেকে নেওয়া হয়।
তার বাবা বলেন,
“আসতে বাধ্য করা হয়েছিল। না এলে নির্যাতন করা হতো।”
শেখ হাসিনার হাতে অর্থ গ্রহণের সময় সাঈদের বোন বলেন,
“ভিডিওতে তো দেখা গেছে পুলিশ গুলি করেছে। তদন্তের কী আছে?”
⚖️ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার?
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) জানায়,
এই ঘটনাগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় আসতে পারে।
১০ জুলাই শেখ হাসিনা ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
আগামী আগস্টে তাদের বিচার শুরু হওয়ার কথা।
🟡 সরকার কী বলছে?
আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করেন,
“শেখ হাসিনা কখনও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। ফোনালাপগুলো খণ্ডিত বা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”
No comments:
Post a Comment