| ছয় জুলাইযোদ্ধাকে পুড়িয়ে হত্যা করেন আ.লীগ নেতা |
লালমনিরহাটে ১৫ বছরের আওয়ামী শাসনের অভিযোগ: হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও দুর্নীতি
লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে জনজীবন ছিল আতঙ্ক ও ভয়ের আবহে আবদ্ধ। ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ ফ্যাসিবাদী শাসন, দলীয় সন্ত্রাস, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, জঙ্গিনাটক, জমি দখল এবং বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভিন্নমতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধ ও গুম-খুন রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও গুম
বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১১ জন নেতা হত্যা করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর পাটগ্রামে ছাত্রশিবির ও জামায়াত কর্মীদের ওপর পুলিশ অভিযান চালায়। গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনের দিনে ছয় শিক্ষার্থীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় এবং জুলাই আন্দোলনের সময় আরও তিন যুবক পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। লালমনিরহাটে সাড়ে ১৫ বছরের শাসনে মোট ২৩ জন নিহত হন।
ছয় শিক্ষার্থীর পরিবার ও স্থানীয়রা দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন। শহীদ রিয়াদের মা নাসরিন পারভীন বলেন, “ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল, আজ তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।”
মাফিয়া ও দুর্নীতি
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ ও তার ছেলে রাকিবুজ্জামান আহম্মেদ দীর্ঘ ১৫ বছরে দুর্নীতি, দখল, চাঁদাবাজি ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান সোহাগও অনিয়মের মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের নির্যাতন
জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের উপর সর্বাধিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। গ্রেপ্তার, ভুয়া মামলা, জঙ্গিনাটক এবং ধাওয়া-পালানোর ঘটনা ছিল সাধারণ। যুবকরা অনলাইনে বা ফেসবুকে রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে তাদের জঙ্গি মামলায় ফাঁসানো হতো।
সাংবাদিক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ
লালমনিরহাটে সাংবাদিকদের উপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা, হয়রানি ও মামলা দেওয়া ছিল নিয়মিত ঘটনা। বাক্, চিন্তা, বিবেক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।
আওয়ামী গডফাদার ও সন্ত্রাস
আওয়ামী লীগ নেতা হুন্ডি সুমন দীর্ঘ ১৫ বছরে চোরাচালান, চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক ও হুন্ডি ব্যবসায় অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বিরোধী ও সাধারণ মানুষকে ত্রাসের মধ্যে রাখা হতো।
বিএনপি ও অন্যান্য দলীয় নেতাদের হতাশা
বিএনপি ও সহযোগী দলগুলো ফ্যাসিবাদী সরকারের সন্ত্রাস ও গায়েবি মামলা, হামলা ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। তাদের মতে, দেশের মানুষের উপর দীর্ঘ ১৫ বছরের অত্যাচার ও নির্যাতন ইতিহাসে ম্লান হবে না।
No comments:
Post a Comment