| পুলিশ কর্তার চেয়ারে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র |
রংপুর রেঞ্জে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগদান না, শৃঙ্খলা ও সুশাসনের প্রশ্ন
নানা সমালোচনা ও আলোচনা শেষে সম্প্রতি বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে আওয়ামী লীগের দোসর, জয়পুরহাট ও দিনাজপুরের সাবেক পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হামিদুল আলম মিলনকে। তবে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত ১৩ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এখনও যোগদান না করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশের অভ্যন্তরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
রংপুর রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা যায়, ৬ আগস্ট একযোগে পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপারসহ ৭৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন রেঞ্জে বদলি করা হয়। এর মধ্যে হামিদুল আলম মিলনসহ ১৩ কর্মকর্তাকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজি তাদের কার্যক্রম মনিটরিং ও দেখভাল করার জন্য আলাদাভাবে পুলিশ সদস্য নিয়োগ করেছেন। কিন্তু আদেশের পরও ওই কর্মকর্তারা রংপুর রেঞ্জে যোগদান করেননি।
পুলিশের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, ‘৩৬ জুলাই’ ছাত্র-জনতার হত্যাকারী ও নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যার নির্দেশদাতাসহ অপরাধীদের সংযুক্ত স্থানে পাঠানোর বিষয়টি নিয়মিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আদেশ অমান্য করে প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে সংযুক্ত স্থানে যোগদান করছেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে নানা ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুরের সভাপতি অধ্যাপক ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, “অপরাধী পুলিশ কর্মকর্তাদের শুধু অন্য রেঞ্জে বদলি করলেই হবে না। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
এনসিপির রংপুর মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর নয়ন বলেন, “‘৩৬ জুলাই’ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের ওএসডি না রেখে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে শহীদ জুলাইযোদ্ধা ও আহতদের পরিবার কখনো শান্তি পাবে না।”
বিএনপি রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু মন্তব্য করেন, “যেসব পুলিশ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগকে সহায়তা করে ৩৬ জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল এবং মানুষকে গুলি করে আহত বা হত্যা করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও উত্তরাঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, “রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত হওয়ার কথা থাকা ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা কেন যোগদান করেননি, তা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দেখার বিষয়। তবে জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”
রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আমিনুল ইসলাম বলেন, “৬ আগস্ট রংপুর রেঞ্জে বিতর্কিত ১৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করা হয়েছিল। তারা এখনো যোগদান করেননি। এই কর্মকর্তারা ঢাকার আব্দুল গনি রোডে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বসে দুই বেলা হাজিরা দেওয়ার নামে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা রাজনৈতিক দলের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করে দেশের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মামলা ও সম্পদের হিসাব অনুযায়ী দুদকের কাছে মামলা দেওয়া উচিত।”
No comments:
Post a Comment