হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঠা’: টিউলিপ |
বাংলাদেশের দুর্নীতির মামলায় ‘রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলির পাঠা’ দাবি টিউলিপ সিদ্দিকের
Peoples Bangla
দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত যুক্তরাজ্যের সাবেক ট্রেজারি মন্ত্রী ও লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছেন, বাংলাদেশের দুর্নীতি মামলায় তিনি আসলে ‘রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলির পাঠা’। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে টিউলিপ তার মায়ের, ভাইয়ের ও বোনের জন্য ঢাকার পূর্বাচলে জমি নিশ্চিত করেছিলেন—এমন অভিযোগ আনা হয়েছে। এ অভিযোগকে তিনি ‘সম্পূর্ণ হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দেন। আগামী ১১ আগস্ট তার ও আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
টিউলিপ জানান, তিনি এখনও আনুষ্ঠানিক সমন পাননি এবং ব্রিটিশ আইনজীবী হুগো কিথ কেসির পরামর্শ নিচ্ছেন। অভিযোগগুলোকে তিনি ‘কাফকায়েস্ক দুঃস্বপ্ন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “বিদেশে আমাকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে অথচ এখনো স্পষ্ট করে বলা হয়নি অভিযোগ কী।”
তার দাবি, ২০২৪ সালের শেষ দিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে বিদেশি গণমাধ্যম ও অচেনা ওয়েবসাইটে নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়। এমনকি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের মিথ্যা খবরও ছড়ানো হয়।
এছাড়া ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কেও টিউলিপ ব্যাখ্যা দেন—ব্যবসায়ী রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন না এবং তাকে ভোটও দেননি। পূর্বের এক সাক্ষাৎকারে ফ্ল্যাটটি বাবা-মা কিনেছেন বলার বিষয়ে তিনি জানান, তা ছিল ‘বৃদ্ধ মা-বাবার দুর্বল স্মৃতির’ কারণে হওয়া বিভ্রান্তি।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পর তিনি নিজেই যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীদের নৈতিক মানদণ্ডবিষয়ক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে অভিযোগ পর্যালোচনার জন্য আবেদন করেন। দুই সপ্তাহের তদন্ত শেষে ম্যাগনাস তাকে কোড লঙ্ঘনের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেন, তবে পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট সুনামের ঝুঁকি সম্পর্কে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
টিউলিপ বলেন, “আমি জন্মসূত্রে কার ভাগনি, সেটা আমার হাতে নেই। আমি খালার পক্ষে সাফাই গাইতে আসিনি, চাই বাংলাদেশের জনগণ ন্যায্য বিচার পাক।”
উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাইয়ে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে টিউলিপ অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রী নিযুক্ত হন। তবে এসময়ে বাংলাদেশে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন পতন ঘটে এবং তিনি ও শেখ রেহানা দেশ ছাড়েন।
No comments:
Post a Comment