হাসিনার আর্শীবাদপুষ্ট কর্মকর্তাদের ‘প্রটেকশন’ দিচ্ছেন সরকারের ৪ উপদেষ্টা |
শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী কর্মকর্তারা সচিবালয়ে এখনো ক্ষমতায়
Peoples Bangla ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর সারা দেশের সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সচিবালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে এখনও অবিচলিত অবস্থানে রয়েছেন শেখ হাসিনার নিয়োগকৃত অনেক সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। শীর্ষ পদগুলোতে সামান্য পরিবর্তন হলেও মূল কর্মকাণ্ড এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগে অধিকাংশ আগে থেকে নিয়োজিত কর্মকর্তাই বহাল রয়েছেন। তারা নিজস্ব জোটবদ্ধভাবে কাজ করছেন এবং মাঝে মধ্যে গোপন বৈঠক করে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ অবস্থায় সচিবালয়ে ‘আমলা বিদ্রোহ’ ও আগামী নির্বাচনে বাধার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।
১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে ‘জনতার মঞ্চ’ নামে আন্দোলন ও সচিবালয়ে আমলা বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে সেটির পুনরাবৃত্তির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতিতে।
সচিবালয় সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত সচিবদের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছেন। তাদের মৌখিক আদেশ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার সম্মতি ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকে পদায়ন বা প্রত্যাহার করা যায় না। এর ফলে অনেক সুবিধাভোগী কর্মকর্তা আগের মতোই দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ ছাত্রলীগ পটভূমির হলেও পদে বহাল রয়েছেন। সাতক্ষীরা হত্যাযজ্ঞের অভিযোগে চিহ্নিত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান এখনও দায়িত্বে আছেন। অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারকসহ এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকার ঘনিষ্ঠরাও পদে বহাল এবং পদোন্নতি পাচ্ছেন।
অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী ও একেএম শাহাবউদ্দিন সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অন্যতম অভিযুক্ত মেজবাহ উল হকের স্ত্রী তসলিমা কানিজ নাহিদকেও সচিব পদে উন্নীত করা হয়েছে।
৫ আগস্টের পর পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বিভাজন দেখা যাচ্ছে। যারা জুলাই আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন, তাদের অবহেলা করা হচ্ছে; অন্যদিকে তুঙ্গিপাড়া ও ৩২ নম্বরের অনুগতদের পদায়ন ও পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।
অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও অফিসার্স ক্লাবের সেক্রেটারি এবিএম আবদুস সাত্তার বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিব ফোন ধরছেন না। তারা আগের সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের অপসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তিনি বলেন, বঞ্চিত ও নির্যাতিত কর্মকর্তাদের পদায়নে অবহেলা দুঃখজনক। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার দুর্নীতির প্রমাণ তার কাছে রয়েছে এবং তারা নিয়োগ ও বদলিতে প্রভাবশালী।
No comments:
Post a Comment